গৌরীপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ফটকে তালা-অফিস ফাঁকা!
আপডেটঃ 10:35 am | February 11, 2019

প্রধান প্রতিবেদক :
‘ফটকে তালা, অফিস ফাঁকা’! এমন দৃশ্যই দেখা গেলো ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি/১৯) সকাল ১০টা পর্যন্ত। এ অফিস চলে দেশের আইনে নয়; সাবরেজিস্ট্রারের নিয়মে! ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
সরজমিনে রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি/১৯) সকালে গিয়ে দেখা যায় অফিসের কলাপক্সি ফটকে তালা ঝুলছে। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বেড়িয়ে এলেন খন্ডকালীন কর্মরত ঝাড়–দার মো. মামুন মিয়া। ফটকের ভিতরে প্রত্যেকটি চেয়ার ফাঁকা। শুধু অফিস নয়, পুরো সাবরেজিস্ট্রি এলাকাই ফাঁকা রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা ও সপ্তাহে ৫দিন কর্মদিন। তবে অনুসন্ধানে জানা গেলো এ অফিস চলে দেশের প্রচলিত আইনে নয়! সাবরেজিস্টারের নিয়মে! সপ্তাহের সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার; এ তিনদিন।
তবে চালু হওয়া এ রীতি আর নিয়মকে অস্বীকার করেন উপজেলা সাব-রেজিস্টার মো. নুরুল আমিন তালুকদার। তিনি বলেন, আজ (রোববার) অসুস্থ্য তাই অফিসে আসতে পারেননি। আমি ছুটিতে আছি।
অফিস ফাঁকা-ফটকে তালা প্রসঙ্গে বলেন, অফিস সকাল ৯টায়। ৯টা ৩৭মিনিটেও কেন বন্ধ, তা তিনিও জানেন না।
এ দিকে সাবরেজিস্টার মো. নুরুল আমিন তালুকদারের ছুটির বিষয়টি জানেন না জেলা রেজিস্টার লুৎফুল কবীর। তিনি বলেন, অসুস্থ্য থাকতেই পারেন, বিষয়টি আমি অবগত নই।
সপ্তাহে তিনদিন খোলা থাকে গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমার জানা ছিলো না। অবশ্যই নিয়ম অনুযায়ী ৫দিন খোলা থাকবে।
অপরদিকে সাব-রেজিস্ট্রার সপ্তাহে ৩দিন আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন অফিস সহকারী সাফিয়া খাতুনও। মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমি একটু অসুস্থ্য তাই দেরী হচ্ছে।
এদিকে সকাল ১০টা ১২মিনিট পর্যন্ত ঝাড়–দার ছাড়া কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা মিলেনি। সামনে চায়ের দোকানে সেরেস্তাদার খ্যাত প্রজাস্বত্ব আইন বিষয়ক মোহরা কর্মকর্তা সৈয়দ খায়রুল বাসারের সঙ্গে দেখা হয়। লুঙ্গিপড়া, হাতে ওষুধের বাক্স দেখিয়ে তিনিও বলেন, আমি অসুস্থ্য।
অপরদিকে গৌরীপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল জলিল মুনশী ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফরও স্বীকার করেন সপ্তাহের সোম, মঙ্গল ও বুধবার আসেন সাব-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল আমিন তালুকদার।
সপ্তাহে শুরু আর শেষদিন বন্ধ থাকছে গৌরীপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস। জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। নির্ধারিত দিনে দলিল সম্পাদন না হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে সম্পর্কের অবনতিও ঘটচ্ছে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে ঝগড়া-বিবাদ ও বিশৃঙ্খলা। এ প্রসঙ্গে সিধলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন বলেন, এতো দুর্নীতি আর অনিয়ম দেশের আর কোন অফিসে হয় বলে আমার জানা নেই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারহানা করিম বলেন, সরকারের নিয়মের বাহিরে কোন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতে পারেন না। বিষয়টি আমারও জানা ছিলো না।
//ডেস্ক ইনচার্জ//